গ্রামীণ চক্ষু হাসপাতাল, ঠাকুরগাঁও-র নিজস্ব ভবনে কার্যক্রম শুরুর শুভ উদ্বোধন

গ্রামীণ হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস প্রেস রিলিজ (আগস্ট ২৯, ২০১৫): 

আজ ২৮ আগস্ট, ২০১৫ শনিবার গ্রামীণ হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস লিমিটেডের উদ্যোগে ঠাকুরগাঁও-এ নিজস্ব জায়গায় প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ চক্ষু হাসপাতাল, ঠাকুরগাঁও-র নিজস্ব ভবনের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে।

গ্রামীণ চক্ষু হাসপাতাল, ঠাকুরগাঁও সামাজিক ব্যবসার নীতিতে পরিচালিত গ্রামীণ হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস লিঃ (এঐঝ)-র একটি উদ্যোগ। গত ১৪ মার্চ, ২০১৩ থেকে ঠাকুরগাঁও-এ পূর্ব গোয়ালপাড়ায় গ্রামীণ চক্ষু হাসপাতালের কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। ভবিষ্যতে ০৬ তলা বিশিষ্ট ১০০ শয্যার চক্ষু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যকে সামনে রেখে আপাততঃ ১০ শয্যার ২২ হাজার বর্গফুট আয়তনের হাসপাতাল ভবন ঠাকুরগাঁও-র তেলিপাড়া, সালন্দর-এ নির্মিত নিজস্ব ভবনে আজ থেকে কাজ শুরু করলো।

হাসপাতাল শুরু হতে জুলাই, ২০১৫ পর্যন্ত ঠাকুরগাঁও হাসপাতালে ২,৫০৩ টি ছানি ও অন্যান্য সার্জারী সহ সর্বমোট ৭৩,৬২৭ রোগীর চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছে এবং তার মধ্যে ২৯,৮৬১ জন রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে।

গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা এবং সামাজিক ব্যবসার প্রবক্তা, ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস এঐঝ-র প্রতিষ্ঠাতা। গ্রামীণ পরিবারের ৩টি সহযোগী প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির জন্ম। ২০০৭ সালে বগুড়ায় প্রথম এবং ২০০৯ সালে বরিশালে দ্বিতীয় চক্ষু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এঐঝ চক্ষু চিকিৎসায় তাদের কার্যক্রম শুরু করে। ঠাকুরগাঁও-এ এটি এঐঝ-র তৃতীয় চক্ষু হাসপাতাল। এঐঝ-র চক্ষু হাসপাতালগুলো শুরু হতে অদ্যাবধি ৪০,৫০৪ টি ছানি ও অন্যান্য অপারেশন এবং ৮,৫৫,৫৬৯ রোগী চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছে। মোট রোগীর ২৩% হলো দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ। তাঁরা ক্যাম্পের মাধ্যমে বিনামূল্যে সার্জারী সহ সকল চিকিৎসা সেবা পেয়েছেন। মোট ছানি ও অন্যান্য অপারেশনকৃত রোগীর ১৬ % বিনামূল্যে এবং ১৭ % নামমাত্র ফি-তে সার্জারী সেবা গ্রহণ করেছেন।

সামাজিক ব্যবসায় নীতিতে পরিচালিত বিধায় এঐঝ হাসপাতালগুলোতে অত্যন্ত কম খরচে চিকিৎসা সেবা জনগণের দোড় গোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের অগ্রসরমান পদক্ষেপ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি দেশে তৃতীয় “গ্রামীণ চক্ষু হাসপাতাল, ঠাকুরগাঁও”-র অনুরূপ অনেকগুলো চক্ষু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে সাতক্ষীরায় চতুর্থ চক্ষু হাসপাতাল স্থাপনের প্রাথমিক কার্যক্রম এগিয়ে চলছে।

চক্ষু হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ সম্পর্কে গ্রামীণ হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস লিঃ-র চেয়ারম্যান প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন “এই হাসপাতালগুলো সামাজিক ব্যবসার একটি অনন্য দৃষ্টান্ত। হাসপাতালগুলোর অন্যতম লক্ষ্য হলো লোকসান না দিয়ে মানুষকে সেবাদান করা। সনাতন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মত ব্যক্তিগত মুনাফা অর্জন করাই এদের লক্ষ্য হবে না, বরং কোন রকম লোকসান না দিয়ে মানুষের জন্য অধিকতর কল্যাণ নিশ্চিত করাই এখানে একমাত্র লক্ষ্য। এসব হাসপাতালে বিনিয়োগের জন্য বিনিয়োগকারীরা এখান থেকে কোন মুনাফা গ্রহণ করেন না। অর্জিত মুনাফা হাসপাতালের স¤প্রসারণ ও স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নে ব্যবহৃত হয়।”

ঠাকুরগাঁও-এ গ্রামীণ চক্ষু হাসপাতালসহ প্রতিটি গ্রামীণ চক্ষু হাসপাতালে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে চোখের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা করা হচ্ছে। গ্রামীণ চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য সকল কর্মী অভিজ্ঞ এবং ভারতের প্রখ্যাত অরবিন্দ আই সিস্টেমে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। উন্নত মানের ছানি অপারেশনে আমাদের ডাক্তারদের রয়েছে বিশেষ দক্ষতা।

গ্রামীণ চক্ষু হাসপাতালে মাত্র ১০০ টাকার বিনিময়ে একজন রোগী অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে চক্ষু পরীক্ষা এবং পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন। ক্যাম্পের রোগীরা বিনা পয়সায় এই সুবিধা পাচ্ছেন। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর চিকিৎসার পাশাপাশি আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ও সামর্থ্যবান রোগীরাও এখান থেকে উন্নতমানের চিকিৎসা সুবিধা গ্রহণ করেন। স্বচ্ছল রোগীরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী ছানি অপারেশন করতে পারেন। বাংলাদেশে চক্ষু চিকিৎসার ক্ষেত্রে একটি দৃষ্টান্তমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ার লক্ষ্যই হবে ঠাকুরগাঁও চক্ষু হাসপাতালের একান্ত প্রয়াস।

ঠাকুরগাঁওবাসী সর্বস্তরের জনগণ, সেবা প্রত্যাশি এবং শুভ্যানুধ্যায়ীদের শুভ কামনায় শুরু হলো গ্রামীণ চক্ষু হাসপাতালের যাত্রা।

 

 

Source Link:

Source: Yunus Centre

Updated Date: 9th March, 2017

Related Publications